বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্থ। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় এই দুর্যোগ আমরা কাটিয়ে উঠবো- ইনশাআল্লাহ। করোনা পরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাদান, পরীক্ষা পদ্ধতি ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আসবে ব্যাপক পরিবর্তন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের পাঠদান একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিবে। তাছাড়া পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন একটি অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ই-এডুকেশন ভিত্তিক শিক্ষাদান পদ্ধতির ব্যাপক প্রয়োগ ভবিষ্যতে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হবে- এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। উক্ত বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের সর্বোত্তম সেবা দেয়ার লক্ষ্যে নানাবিধ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কলেজের অভ্যন্তরীণ নিয়মের সাথে সমন্বয় করে আমরা অনলাইন ক্লাস, বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন ও দূর- শিক্ষণ পদ্ধতির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের ১টি শিফ্টের পরিবর্তে ২টি শিফ্টের মাধ্যমে পাঠদান, প্রতি ক্লাসে প্রয়োজনে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদান করা হবে। শিক্ষাঙ্গনকে জীবানুমুক্তকরণ, তাপমাত্রা মাপনযন্ত্র, শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসম্পন্ন মাস্ক ও হ্যান্ড সেনিটেইজার বিতরণসহ স্বাস্থ্য বিধির সকল আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় যে শিক্ষাজট সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সময়োপযোগী ও বাস্তাব পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
আমাদের সকল আয়োজন স্নেহভাজন শিক্ষার্থীদের জন্য। সে লক্ষ্যে সম্মানিত শিক্ষকগণ আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার পাশাপাশি সকল ধরনের উগ্রবাদের বিরুদ্ধে তাদের সচেতন করবেন। রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের প্রতি সঠিক দায়িত্বপালন এবং ধর্মীয় বিধিবিধান যথাযথ পালনে উদ্বুদ্ধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশই আমাদের মূল লক্ষ্য।
বর্তমান বিশ্বে শিক্ষা প্রদান ও গ্রহণের সাথে অর্থনীতির গভীর সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যাতে দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়- সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আগামী দশকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে বদ্ধপরিকর। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা যেন সেখানে বাধা
হয়ে না দাঁড়ায়; সেটিও আমাদের লক্ষ্য থাকবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে। আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ-নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার প্রত্যাশায় মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।